আকবর, জুনাইদ, আখলাকদের বাড়ী ফেরা হয় না..
_______________________________________________
আকবর খান, পেশায় দুধ ব্যবসায়ী। দুধ বিক্রি করে ষাট হাজার টাকা জমিয়ে হাটে গেছিলেন আরো দুটো বকনা কিনতে। আরেকটু স্বাচ্ছল্য আসবে সংসারে, বউকে কাঁকন গড়ে দেবেন। কিন্তু সংখ্যাগুরুর দেশে সংখ্যালঘুদের স্বপ্ন দেখা যে চুড়ান্ত পাপ একথা জানতেন না আকবর। তাকে পিটিয়ে পিটিয়ে মারা হচ্ছিল। মানুষ জড়ো হয়ে দেখছিল গোরক্ষক বাহিনীর সে উন্মত্ততা। বাঁচাতে আসেনি কেউ। রাষ্ট্রযন্ত্র নির্বিকার ভাবে দেখছিল সব। গোঙাচ্ছিলেন আকবর, বাঁচার আর্তি জানাচ্ছিলেন। রাষ্ট্রযন্ত্র ডান্ডাপেটা করে চুপ করিয়ে বুঝিয়েছে সংখ্যালঘুদের চিৎকার করতে নেই। যুগে যুগে, দেশে দেশে, সংখ্যাঘুদের আর্তি এভাবেই ডান্ডা মেরে চুপ করায় রাষ্ট্রযন্ত্র। সংখ্যালঘুর রক্তে যাতে তাদের সরকারী গাড়ি নোংরা না হয়ে যায়, তারজন্যে গাড়িতে তোলার আগে ভালোভাবে ধোয়া হয় আকবরকে। রাষ্ট্রের পেয়াদারা চা খায়, অপেক্ষা করে, সময় কাটায়। ওদিকে গাড়িতে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছে একজন মানুষ, যাকে কিনা রাষ্ট্র, সংখ্যাগুরুর দেশ, ঠিক 'মানুষ' বলে মনে করে না। সবমিলিয়ে তিনঘন্টা সময় কাটিয়ে যখন রাষ্ট্রের পুলিশ পেয়াদারা হাসপাতালে পৌছোয়, ততক্ষণে আকবর মৃত। না আকবর নন শুধু, ততক্ষণে সংবিধান মৃত, দেশ মৃত, সভ্যতা মৃত।
ঠিক একইভাবে জুনেদ, ওমর, আখলাক, পেহলু খান, আফরাজুল সহ সরকারী হিসেবে মোট ৪৬ জন সংখ্যালঘু (না সংখ্যালঘু নয় আপনাদের ভাষায় যারা কৃমি কীট, যারা মানুষের মতো দেখতে হলেও ঠিক মানুষ নয়) গোরক্ষক বাহিনী, এন্টি রোমিও স্কোয়াডের হাতে নির্মম ভাবে খুন হয়েছেন ২০১৭ সাল থেকে এখন অব্দি। মারধরের পরিসংখ্যানটা আর নাইবা দিলাম!!
আমাদের মতো কিছু দেশদ্রোহী এতে সরকার আর রাষ্ট্রের ভুমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুললে, তার জবাব ও বিজেপির বিধায়ক রাজা সিং দিয়েছেন।নিজের গোশালায় দাঁড়িয়ে তিনি বলেছেন, "গরু বাঁচাতে গিয়ে কোনও দুর্ঘটনা ঘটে গেলে মিডিয়া এমন ভাব করে যেন ভূমিকম্প হয়ে গেছে।" সংঘ নেতা ইন্দ্রেশ কুমার বলেছেন, "গোমাংস খাওয়া ছেড়ে দিন, তাহলেই গণপিটুনি বন্ধ হয়ে যাবে"। সঙ্গে হিতোপদেশ দিয়ে এটাও বলেন, " অবশ্যই গোরক্ষা করা এবং গোবরকে সিমেন্ট হিসেবে ব্যবহার করা উচিত। তাহলেই অভাব আর গণপিটুনিতে পুর্ণচ্ছেদ পড়বে"।
এসব কথা শুনে আশ্চর্য্য হইনা এখন আর। কারন আমরা দেখেছি এর আগে আফরাজুলের খুনীকে দেবতা জ্ঞানে রথে বসিয়ে রথ টানতে, আমরা দেখেছি সেই খুনীর ব্যাঙ্ক একাউন্টে আমাদেরই সহনাগরিকদের কাড়ি কাড়ি টাকা পাঠাতে। আমরা দেখেছি আলিমউদ্দিনকে যারা পিটিয়ে মেরেছিল তাদের ফুলের তোড়া দিয়ে বরণ করছেন এক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। আমরা দেখেছি আখলাকের খুনীদের সম্মান জানাতে সরকারী চাকরিতে নিযুক্ত করা হয়েছে তাদের। আমরা দেখেছি অনেক কিছুই। এখনো দেখে যাচ্ছি। হয়তো নৃশংস খুন হওয়ার আগে অব্দি দেখেই যাবো।
গত তেইশ জুলাই আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত এক সভায় ছাত্রছাত্রী সহ উপাচার্য্য এবং শিক্ষকদের নৈতিকতার পাঠ দিয়ে গেছেন সুনীল দেওধর। তিনি কে? তিনি আর এস এসের দাপুটে প্রচারক এবং বিজেপির ত্রিপুরা জয়ের অন্যতম কারিগর। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সহ ছাত্রছাত্রীদের সমস্বরে "ভারত মাতাকি জয়" এবং "বন্দে মাতরম" ধ্বনি উচ্চারন করিয়ে তার আঠান্ন মিনিটের ভাষনে বলেছেন, " দেশমাতার নামে জয়ধ্বনি দিতে কোনো পন্থা অবলম্বনের প্রয়োজন নেই। চিন বা আমেরিকার অনুমতি নেওয়ারও প্রয়োজন নেই। স্বগর্বে দেশমাতাকে শ্রদ্ধা করলে বাড়বে নৈতিক মূল্যবোধ। বাড়বে প্রকৃত মানুষ হওয়ার তাড়না"।
অথচ আমরা দেখেছি জুনেদ থেকে আফরাজুল, আকবর থেকে আখলাক - প্রত্যেককেই "ভারত মাতা কি জয়" "জয় শ্রী রাম" এই স্লোগানগুলো উচ্চারন করেই নৃশংস ভাবে খুন করা হয়েছে। আমরা দেখেছি নিউজ চ্যানেল এবং ফেইসবুকেই বিভিন্ন ভিডিওতে, সংখ্যালঘু মানুষকে একদল উন্মত্ত ছেলে "ভারত মাতা কি জয়" বলানোর জন্যে বেঁধে রেখে মারধর করছে! ভিখিরি বয়স্ক দম্পতিকেও রেহাই দেয় নি তারা। আমরা দেখেছি রামনবমীর অস্ত্র মিছিলে "ভারত মাতা কি জয়" স্লোগানের তান্ডব। তাহলে "ভারতমাতার জয়" স্লোগানে এই নৃশংস নৈতিকতার পাঠ ই কি দিয়ে গেলেন সুনীল দেওধর? তিনি কি ছাত্রছাত্রীগুলোকে শিখিয়ে গেলেন এইভাবেই স্বগর্বে স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত করে দেশ থেকে বিধর্মী মেরে, তাড়িয়ে স্বপ্নের "হিন্দুরাষ্ট্র" তৈরী কর?? প্রকৃত মানুষ কি তবেই হবে তারা? প্রশ্ন জাগে। আতংকিত হই মানুষ গড়ার কারখানাগুলোতেও এদের থাবা বসানো দেখে!
সারা দেশ জুড়ে এক শ্রেণির বিকৃত উন্মাদ, মানুষ নামধারী কিছু জানোয়ার, মানুষ নিধন যজ্ঞে মেতেছে বিভিন্ন রূপে, বিভিন্ন চেহারায়। কোথাও গোরক্ষার নামে, কোথাও হিন্দুত্ব রক্ষার নামে। শুধুমাত্র মুসলিম হলেই পিটিয়ে মারা যায়? দলিত হলেই পিটিয়ে মারা যায়? মুসলিম, দলিত, আদিবাসীরা ভারতবর্ষ নামক রাষ্ট্রটির নাগরিক নন? তাদের সুরক্ষা দেওয়ার দায় নেই রাষ্ট্রের? সরকারের কোনো দায় নেই?? দিনের পর দিন নিরীহ মানুষ গোরক্ষার নামে খুন হচ্ছে আর এইসময়েই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী 200 গরু নিয়ে সদলবলে চলেছেন রোয়ান্ডা। কি বার্তা দিতে চাইছেন তিনি দেশের জনগণকে?? তার মন্ত্রীরা কি বার্তা দিচ্ছে?? তাদের এই বার্তাগুলোই কি জাতি-হত্যাকে প্রশ্রয় জোগাচ্ছে না দিনের পর দিন?? গরু রক্ষার নামে রাষ্ট্রের নাগরিকদের খুন হতে হবে, এটা কোন ধরণের ধর্ম রক্ষা?? কোন ধরনের গণতন্ত্র??
যারা গরুকে দেবতুল্য সম্মান দেয়, তাদের ধর্মীয় অনুভুতির প্রতি যেরকম সম্মান প্রদর্শন করা উচিত, ঠিক সেইভাবে অন্য ধর্মের মানুষ, যারা গরুকে দেবতা মনে করেন না, তাদের প্রতিও সম্মান প্রদর্শনের কথা বলা হয়েছে সংবিধানে। তাহলে কোন ভিত্তিতে দেশের সাধারণ নিরীহ নাগরিকদের একের পর এক খুন হতে হচ্ছে??
এই প্রশ্নগুলোই আমাদের বারবার করে যেতে হবে। প্রতিটা অত্যাচারের, প্রতিটা নৃশংসতার ছবি যারা রক্ত দিয়ে এঁকে গেছে, জানিয়ে গেছে, সেটা আরো আরো আরো ছড়িয়ে দিতে হবে। চুড়ান্ত চ্যালেঞ্জ জানিয়ে যেতে হবে সরকারের প্রত্যেকটা মানুষহত্যাকারী নীতিকে। এই হত্যালীলাকে কিছুতেই "ট্রেন্ড" হয়ে উঠতে দেওয়া যায় না। কিছুতেই না।
#Not_In_My_Name
#Murder_of_Democracy
_______________________________________________
আকবর খান, পেশায় দুধ ব্যবসায়ী। দুধ বিক্রি করে ষাট হাজার টাকা জমিয়ে হাটে গেছিলেন আরো দুটো বকনা কিনতে। আরেকটু স্বাচ্ছল্য আসবে সংসারে, বউকে কাঁকন গড়ে দেবেন। কিন্তু সংখ্যাগুরুর দেশে সংখ্যালঘুদের স্বপ্ন দেখা যে চুড়ান্ত পাপ একথা জানতেন না আকবর। তাকে পিটিয়ে পিটিয়ে মারা হচ্ছিল। মানুষ জড়ো হয়ে দেখছিল গোরক্ষক বাহিনীর সে উন্মত্ততা। বাঁচাতে আসেনি কেউ। রাষ্ট্রযন্ত্র নির্বিকার ভাবে দেখছিল সব। গোঙাচ্ছিলেন আকবর, বাঁচার আর্তি জানাচ্ছিলেন। রাষ্ট্রযন্ত্র ডান্ডাপেটা করে চুপ করিয়ে বুঝিয়েছে সংখ্যালঘুদের চিৎকার করতে নেই। যুগে যুগে, দেশে দেশে, সংখ্যাঘুদের আর্তি এভাবেই ডান্ডা মেরে চুপ করায় রাষ্ট্রযন্ত্র। সংখ্যালঘুর রক্তে যাতে তাদের সরকারী গাড়ি নোংরা না হয়ে যায়, তারজন্যে গাড়িতে তোলার আগে ভালোভাবে ধোয়া হয় আকবরকে। রাষ্ট্রের পেয়াদারা চা খায়, অপেক্ষা করে, সময় কাটায়। ওদিকে গাড়িতে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছে একজন মানুষ, যাকে কিনা রাষ্ট্র, সংখ্যাগুরুর দেশ, ঠিক 'মানুষ' বলে মনে করে না। সবমিলিয়ে তিনঘন্টা সময় কাটিয়ে যখন রাষ্ট্রের পুলিশ পেয়াদারা হাসপাতালে পৌছোয়, ততক্ষণে আকবর মৃত। না আকবর নন শুধু, ততক্ষণে সংবিধান মৃত, দেশ মৃত, সভ্যতা মৃত।
ঠিক একইভাবে জুনেদ, ওমর, আখলাক, পেহলু খান, আফরাজুল সহ সরকারী হিসেবে মোট ৪৬ জন সংখ্যালঘু (না সংখ্যালঘু নয় আপনাদের ভাষায় যারা কৃমি কীট, যারা মানুষের মতো দেখতে হলেও ঠিক মানুষ নয়) গোরক্ষক বাহিনী, এন্টি রোমিও স্কোয়াডের হাতে নির্মম ভাবে খুন হয়েছেন ২০১৭ সাল থেকে এখন অব্দি। মারধরের পরিসংখ্যানটা আর নাইবা দিলাম!!
আমাদের মতো কিছু দেশদ্রোহী এতে সরকার আর রাষ্ট্রের ভুমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুললে, তার জবাব ও বিজেপির বিধায়ক রাজা সিং দিয়েছেন।নিজের গোশালায় দাঁড়িয়ে তিনি বলেছেন, "গরু বাঁচাতে গিয়ে কোনও দুর্ঘটনা ঘটে গেলে মিডিয়া এমন ভাব করে যেন ভূমিকম্প হয়ে গেছে।" সংঘ নেতা ইন্দ্রেশ কুমার বলেছেন, "গোমাংস খাওয়া ছেড়ে দিন, তাহলেই গণপিটুনি বন্ধ হয়ে যাবে"। সঙ্গে হিতোপদেশ দিয়ে এটাও বলেন, " অবশ্যই গোরক্ষা করা এবং গোবরকে সিমেন্ট হিসেবে ব্যবহার করা উচিত। তাহলেই অভাব আর গণপিটুনিতে পুর্ণচ্ছেদ পড়বে"।
এসব কথা শুনে আশ্চর্য্য হইনা এখন আর। কারন আমরা দেখেছি এর আগে আফরাজুলের খুনীকে দেবতা জ্ঞানে রথে বসিয়ে রথ টানতে, আমরা দেখেছি সেই খুনীর ব্যাঙ্ক একাউন্টে আমাদেরই সহনাগরিকদের কাড়ি কাড়ি টাকা পাঠাতে। আমরা দেখেছি আলিমউদ্দিনকে যারা পিটিয়ে মেরেছিল তাদের ফুলের তোড়া দিয়ে বরণ করছেন এক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। আমরা দেখেছি আখলাকের খুনীদের সম্মান জানাতে সরকারী চাকরিতে নিযুক্ত করা হয়েছে তাদের। আমরা দেখেছি অনেক কিছুই। এখনো দেখে যাচ্ছি। হয়তো নৃশংস খুন হওয়ার আগে অব্দি দেখেই যাবো।
গত তেইশ জুলাই আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত এক সভায় ছাত্রছাত্রী সহ উপাচার্য্য এবং শিক্ষকদের নৈতিকতার পাঠ দিয়ে গেছেন সুনীল দেওধর। তিনি কে? তিনি আর এস এসের দাপুটে প্রচারক এবং বিজেপির ত্রিপুরা জয়ের অন্যতম কারিগর। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সহ ছাত্রছাত্রীদের সমস্বরে "ভারত মাতাকি জয়" এবং "বন্দে মাতরম" ধ্বনি উচ্চারন করিয়ে তার আঠান্ন মিনিটের ভাষনে বলেছেন, " দেশমাতার নামে জয়ধ্বনি দিতে কোনো পন্থা অবলম্বনের প্রয়োজন নেই। চিন বা আমেরিকার অনুমতি নেওয়ারও প্রয়োজন নেই। স্বগর্বে দেশমাতাকে শ্রদ্ধা করলে বাড়বে নৈতিক মূল্যবোধ। বাড়বে প্রকৃত মানুষ হওয়ার তাড়না"।
অথচ আমরা দেখেছি জুনেদ থেকে আফরাজুল, আকবর থেকে আখলাক - প্রত্যেককেই "ভারত মাতা কি জয়" "জয় শ্রী রাম" এই স্লোগানগুলো উচ্চারন করেই নৃশংস ভাবে খুন করা হয়েছে। আমরা দেখেছি নিউজ চ্যানেল এবং ফেইসবুকেই বিভিন্ন ভিডিওতে, সংখ্যালঘু মানুষকে একদল উন্মত্ত ছেলে "ভারত মাতা কি জয়" বলানোর জন্যে বেঁধে রেখে মারধর করছে! ভিখিরি বয়স্ক দম্পতিকেও রেহাই দেয় নি তারা। আমরা দেখেছি রামনবমীর অস্ত্র মিছিলে "ভারত মাতা কি জয়" স্লোগানের তান্ডব। তাহলে "ভারতমাতার জয়" স্লোগানে এই নৃশংস নৈতিকতার পাঠ ই কি দিয়ে গেলেন সুনীল দেওধর? তিনি কি ছাত্রছাত্রীগুলোকে শিখিয়ে গেলেন এইভাবেই স্বগর্বে স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত করে দেশ থেকে বিধর্মী মেরে, তাড়িয়ে স্বপ্নের "হিন্দুরাষ্ট্র" তৈরী কর?? প্রকৃত মানুষ কি তবেই হবে তারা? প্রশ্ন জাগে। আতংকিত হই মানুষ গড়ার কারখানাগুলোতেও এদের থাবা বসানো দেখে!
সারা দেশ জুড়ে এক শ্রেণির বিকৃত উন্মাদ, মানুষ নামধারী কিছু জানোয়ার, মানুষ নিধন যজ্ঞে মেতেছে বিভিন্ন রূপে, বিভিন্ন চেহারায়। কোথাও গোরক্ষার নামে, কোথাও হিন্দুত্ব রক্ষার নামে। শুধুমাত্র মুসলিম হলেই পিটিয়ে মারা যায়? দলিত হলেই পিটিয়ে মারা যায়? মুসলিম, দলিত, আদিবাসীরা ভারতবর্ষ নামক রাষ্ট্রটির নাগরিক নন? তাদের সুরক্ষা দেওয়ার দায় নেই রাষ্ট্রের? সরকারের কোনো দায় নেই?? দিনের পর দিন নিরীহ মানুষ গোরক্ষার নামে খুন হচ্ছে আর এইসময়েই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী 200 গরু নিয়ে সদলবলে চলেছেন রোয়ান্ডা। কি বার্তা দিতে চাইছেন তিনি দেশের জনগণকে?? তার মন্ত্রীরা কি বার্তা দিচ্ছে?? তাদের এই বার্তাগুলোই কি জাতি-হত্যাকে প্রশ্রয় জোগাচ্ছে না দিনের পর দিন?? গরু রক্ষার নামে রাষ্ট্রের নাগরিকদের খুন হতে হবে, এটা কোন ধরণের ধর্ম রক্ষা?? কোন ধরনের গণতন্ত্র??
যারা গরুকে দেবতুল্য সম্মান দেয়, তাদের ধর্মীয় অনুভুতির প্রতি যেরকম সম্মান প্রদর্শন করা উচিত, ঠিক সেইভাবে অন্য ধর্মের মানুষ, যারা গরুকে দেবতা মনে করেন না, তাদের প্রতিও সম্মান প্রদর্শনের কথা বলা হয়েছে সংবিধানে। তাহলে কোন ভিত্তিতে দেশের সাধারণ নিরীহ নাগরিকদের একের পর এক খুন হতে হচ্ছে??
এই প্রশ্নগুলোই আমাদের বারবার করে যেতে হবে। প্রতিটা অত্যাচারের, প্রতিটা নৃশংসতার ছবি যারা রক্ত দিয়ে এঁকে গেছে, জানিয়ে গেছে, সেটা আরো আরো আরো ছড়িয়ে দিতে হবে। চুড়ান্ত চ্যালেঞ্জ জানিয়ে যেতে হবে সরকারের প্রত্যেকটা মানুষহত্যাকারী নীতিকে। এই হত্যালীলাকে কিছুতেই "ট্রেন্ড" হয়ে উঠতে দেওয়া যায় না। কিছুতেই না।
#Not_In_My_Name
#Murder_of_Democracy